আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম
কয়েক দিন আগে খাবার টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছিলাম আমি আর আমার সাড়ে তিন বছরের ভাতিজা রমি’কে নিয়ে। রমি নার্সারী ক্লাসের অনিয়মিত ছাত্র, কম্পিউটারের “রোড রাশ” গেইম ওর খুব পছন্দের একটি, ভালো খেলতেও পারে, আমাকে প্রায়ই হারিয়ে দেয়। কথার পৃষ্ঠে কথা বলতে কাল ক্ষেপণ করেনা। বয়সের তুলনায় বুদ্ধিটা বোধ হয় একটু বেশী। আমার বয়স যখন সতের বছর (১৯৯৭ সালে) তখন কাঁপা কাঁপা হাত দিয়ে কম্পিউটারে মাউজ স্পর্শ করেছিলাম স্পষ্ট মনে আছে আর আঠারো বছর বয়সে সেই কাংখিত কম্পিউটারের গর্বিত মালিক হই অথচ রমি’রা নিজেদের হাত
পায়ের সাথে পরিচিত হতে হতে শিখে নেয় কম্পিউটারের মাউজ, কিবোর্ড ইত্যাদি। খেতে খেতে রমির সাথে গল্প করছিলাম। আমার খালা লন্ডন থেকে এসেছেন, চার মাসের ব্যবধানে তিনি তৃত্বীয় বারের মত বাংলাদেশে বেড়াতে এলেন। প্রত্যেকবার-ই রমির জন্য বিশেষ বিশেষ গিফট নিয়ে আসেন। আমি কথাচ্ছলে রমিকে জিজ্ঞেস করলাম, লন্ডনী দাদু মনি এইবার তোমার জন্য কি আনলেন ? রমি বেশ উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বলল, আমার জন্য কয়েকটি গাড়ী, চকোলেট, জামা কাপড় আর বেবীর জন্য সুন্দর নরম একটি ব্ল্যাঙ্কিট (কম্বল)। আমি কিছুটা আহত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম বেবী !! বেবীটা কে ? সে আবার উৎফুল্ল হয়ে বল্লো কিছুদিন পরে আমাদের একটা নতুন বেবী হবে না ? তার জন্য। আমি রমিকে থামালাম। আজকালকার ছেলেপুলেরা অনেক বেশী জানে। কখনো কখনো যে সময় অনেক পিছিয়ে পড়ে তা রমি’দের না দেখলে বিশ্বাস করা যায়না। রমির ভাষ্য অনুযায়ী সেই অতি কাঙ্খীত “কিছুদিন পরে” ধরা দিলো গত কাল বিকেলে (২৮শে ডিসেম্বর ০৯)। দিনের ম্লান হয়ে যাওয়া আলোকে পেছনে ফেলে আপন আলোয় ভূমিষ্ট হলো একটি কন্যা শিশু রমির মায়ের গর্ভ থেকে। একটি কন্যা শিশুর নিষ্পাপ মুখ দেখার জন্য আমাদের পরিবারের সবাই কত আনন্দ আর উৎকন্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম। নবজাতক কন্যা শিশুর ভূমিষ্ট হওয়ার খবর শুনেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে ছুটে যাই হাসপাতালে তাঁকে দেখার জন্য। তখন আমার মনে হয়েছিলো রমি’র আনন্দ আমার আনন্দকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। হাসপাতালে গিয়েই পরম মমতায় কোলে নিই সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া আমার ভাতিজীকে। ওর মুখের পানে তাকিয়ে মনে হয়েছিলো এই মুহুর্তে আমিই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষের একজন। কিন্তু হঠাৎ করেই আমার আনন্দে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় আমার ভাবনা। প্রতিদিনই আমাদের দেশে শত শত শিশু ভূমিষ্ট হচ্ছে, কত পরম মমতায় কোলে টানি তাদের, তাদের নিয়ে কত আগ্রহ, কত স্বপ্ন, কত ভাবনা। অথচ আমরা কি পারছি শিশুদের জন্য সত্যিকারে একটি বাস যোগ্য একটি পৃথিবী গড়ে তুলতে ? ধোঁয়াটে পৃথিবীর ঘোলাটে ভবিষ্যতের দিকে ছুড়ে মারছি আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে। নবজাতক শিশুর কান্নায় আমার ভাবনাতে ছেদ পড়ে, ওর নিষ্পাপ মুখে আলতো আদর করে মনে মনে বলতে থাকি “মা, এই পৃথিবী তোর জন্য কতটা বাস যোগ্য জানিনা... কান্না থামিয়ে ফেল, তোর এই কান্না তাঁরা শুনবে না যারা এই পৃথিবীকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে, তোকে সংগ্রাম করে বাঁচতে হবে। পারবিতো ? তোর জন্য আমার শুভ কামনা”।
পায়ের সাথে পরিচিত হতে হতে শিখে নেয় কম্পিউটারের মাউজ, কিবোর্ড ইত্যাদি। খেতে খেতে রমির সাথে গল্প করছিলাম। আমার খালা লন্ডন থেকে এসেছেন, চার মাসের ব্যবধানে তিনি তৃত্বীয় বারের মত বাংলাদেশে বেড়াতে এলেন। প্রত্যেকবার-ই রমির জন্য বিশেষ বিশেষ গিফট নিয়ে আসেন। আমি কথাচ্ছলে রমিকে জিজ্ঞেস করলাম, লন্ডনী দাদু মনি এইবার তোমার জন্য কি আনলেন ? রমি বেশ উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বলল, আমার জন্য কয়েকটি গাড়ী, চকোলেট, জামা কাপড় আর বেবীর জন্য সুন্দর নরম একটি ব্ল্যাঙ্কিট (কম্বল)। আমি কিছুটা আহত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম বেবী !! বেবীটা কে ? সে আবার উৎফুল্ল হয়ে বল্লো কিছুদিন পরে আমাদের একটা নতুন বেবী হবে না ? তার জন্য। আমি রমিকে থামালাম। আজকালকার ছেলেপুলেরা অনেক বেশী জানে। কখনো কখনো যে সময় অনেক পিছিয়ে পড়ে তা রমি’দের না দেখলে বিশ্বাস করা যায়না। রমির ভাষ্য অনুযায়ী সেই অতি কাঙ্খীত “কিছুদিন পরে” ধরা দিলো গত কাল বিকেলে (২৮শে ডিসেম্বর ০৯)। দিনের ম্লান হয়ে যাওয়া আলোকে পেছনে ফেলে আপন আলোয় ভূমিষ্ট হলো একটি কন্যা শিশু রমির মায়ের গর্ভ থেকে। একটি কন্যা শিশুর নিষ্পাপ মুখ দেখার জন্য আমাদের পরিবারের সবাই কত আনন্দ আর উৎকন্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম। নবজাতক কন্যা শিশুর ভূমিষ্ট হওয়ার খবর শুনেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে ছুটে যাই হাসপাতালে তাঁকে দেখার জন্য। তখন আমার মনে হয়েছিলো রমি’র আনন্দ আমার আনন্দকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। হাসপাতালে গিয়েই পরম মমতায় কোলে নিই সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া আমার ভাতিজীকে। ওর মুখের পানে তাকিয়ে মনে হয়েছিলো এই মুহুর্তে আমিই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষের একজন। কিন্তু হঠাৎ করেই আমার আনন্দে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় আমার ভাবনা। প্রতিদিনই আমাদের দেশে শত শত শিশু ভূমিষ্ট হচ্ছে, কত পরম মমতায় কোলে টানি তাদের, তাদের নিয়ে কত আগ্রহ, কত স্বপ্ন, কত ভাবনা। অথচ আমরা কি পারছি শিশুদের জন্য সত্যিকারে একটি বাস যোগ্য একটি পৃথিবী গড়ে তুলতে ? ধোঁয়াটে পৃথিবীর ঘোলাটে ভবিষ্যতের দিকে ছুড়ে মারছি আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে। নবজাতক শিশুর কান্নায় আমার ভাবনাতে ছেদ পড়ে, ওর নিষ্পাপ মুখে আলতো আদর করে মনে মনে বলতে থাকি “মা, এই পৃথিবী তোর জন্য কতটা বাস যোগ্য জানিনা... কান্না থামিয়ে ফেল, তোর এই কান্না তাঁরা শুনবে না যারা এই পৃথিবীকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে, তোকে সংগ্রাম করে বাঁচতে হবে। পারবিতো ? তোর জন্য আমার শুভ কামনা”।
জবরুল আলম সুমন
সিলেট।